bichhun-dhan

Bichuun Dhan

বিছুন খেয়ে ফেললে কী হয়?

(কথিকা)

ডাঃ সাদেকুল ইসলাম তালুকদার

কৃষক জমি থেকে ফসল তোলার পর নিজেদের প্রয়োজন হিসাব করে রেখে দিয়ে বাকীটা বিক্রি করে দেয়। বাংলাদেশের কৃষকদের প্রধান ফসল ধান। ভাত রান্না করার জন্য ধানকে সিদ্ধ করে শুকিয়ে গোলায় রেখে দিতে হয়। সিদ্ধ শুকনো ধান ঢেকিতে ভাঙ্গিয়ে অথবা ধান ভাঙ্গার মেশিন দিয়ে ভাঙ্গিয়ে চাউল বের করে চাউলের ড্রামে রেখে দেয় ভাত রান্না করার জন্য। এই চাউলকে বলা হয় সিদ্ধ চাউল। পিঠা-পায়েস-পোলাও রান্না করার জন্য যে চাউল বের করা হয় সেটাকে বলা হয় আতপ চাউল বা আওলা চাউল। এই চাউল বের করা হয় শুকনো আসিদ্ধ বা আওলা ধান থেকে। মুড়ি বানানোর জন্য সাধারণত বড় বড় ধান বেছে নিতে হয়। এগুলোও সিদ্ধ ধান থেকে বের করতে হয়। আগের দিনে আলোই ধান নামে বড় বড় জাতের ধান ছিলো। এগুলোর মুড়ি বড় বড় হতো। আগামীতে বোনার জন্য কিছু ধান রেখে দিতে হয়। এগুলোকে বলা হয় বিছুন ধান। যেগুলোকে আমরা বীজ ধান নামে জানি। রোগমুক্ত হৃষ্টপুষ্ট ধানগুলো বিছুন ধান হিসাবে রেখে দেয়া হয়।

সারাবছর কী পরিমাণ ধান লাগবে তার একটা ভালো হিসাব রাখতে হয়। কেউ যদি আনন্দ ফুর্তি করে গোলায় রেখে দেয়া ধান বিক্রি করে, শেষের দিকে খাদ্যের অভাবে পড়বে। এমন মানুষকে বলা হয় বেইন্যা। বেইন্যারা খাওয়ার জন্য রেখে দেয়া ধান বিক্রি করে ভালো ভালো খাবার কিনে খায়, ভালো ভালো কাপড় চোপড় কিনে পরে ফ্যারাংগি করে। শেষে ভাতের ধান কম পড়ে যায়। তখন বেইন্যারা বিছুন ধানও সিদ্ধ করে ভাতের চাউল বানিয়ে খেয়ে ফেলে। ধান বোনার সময় এলে বিছুন ধান তো ঘরে থাকেই না, বিছুন ধান কেনারও টাকা হাতে থাকে না। শেষে জমি বিক্রি করে ভাতের ধান ও বিছুন ধান কিনতে হয়। বেইন্যারা এভাবে গরীব হতে থাকে। কাজেই এমন ভাবে হিসাব করে চলতে হবে যেনো বিছুন ধানে হাত দিতে না হয়।

৮ অক্টোবর ২০২২ খ্রি.

#talkofsadequel

ads banner: