Ruhini

Ruhini Da

রুহিনী দা

রুহিনী দাকে আমি প্রথম দেখি ১৯৯৩ সনে। নাম জানতাম না। পিজিতে এমফিল এডমিশন টেস্টের ভাইবা দিচ্ছিলাম একই দিনে। এখনকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন আইপিজিএমআর নামে একটা পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিকেল ইনস্টিটিউট ছিল। সংক্ষেপে বলা হতো পিজি। পিজিতে পড়া ও শিক্ষকতা করা খুবই সম্মানের ব্যাপার ছিলো। বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর বি আর খান স্যারের অফিস কক্ষে মৌখিক পরীক্ষা হচ্ছিল। একজন একজন করে ক্যান্ডিডেট প্রবেশ করছিলেন। আমরা সবাই ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করছিলাম। ১০/১৫ মিনিট পর ফিরে এসে একেকজন একেক অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিচ্ছিলেন। কী কী প্রশ্ন করলেন এটাই ছিলো অপেক্ষমান ক্যান্ডিডেটদের কমন প্রশ্ন। বর্ণনাকারীরা ভয়ংকরভাবে তাদের অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন। সবাই কোলাহল করে সেই সব প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করছিলেন। আমি সাধারণত নতুন কারো সাথে খোলামেলা আলাপ করতে পারি না। তাই, আমাকে অনেকেই বোকা ছেলেই মনে করে থাকেন। সেদিন আমি বোকার মতো এক দিকে বসে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছিলাম। ছোট বেলা হুজুর ছমির মাওলানা আমাকে দোয়া শিখিয়েছিলেন পরীক্ষার আগে পড়ার জন্য। সেই দোয়াটা বার বার পড়ছিলাম আর দেখছিলাম অন্যরা কিভাবে কি ভঙ্গিতে কথা বলেন। কিভাবে শরীর নাড়াচাড়া করেন। কত স্মার্ট তারা। আমি মানুষের কথা বলার ভঙ্গি খুব নিখুঁতভাবে পর্যবেক্ষণ করে থাকি। দোয়াটা আমার ছাত্রদেরকেও শেখাই পরীক্ষার আগে পড়ার জন্য। দোয়াটা এমন “রাব্বি, জেদনি, এলমা।” অর্থাৎ “হে আমার রব, আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দিন।” একজন ক্যান্ডিডেট ভাইভা দিয়ে ফিরে এসে তার অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন। তার চেহাড়া দেখে বেশী স্মার্ট মনে হলো না। তিনি দু’হাতের দুই তর্জনী আঙ্গুল খারা করে কপালের দুপাশে ঠেকিয়ে বলছিলেন “সবই পারলাম। কিন্তু স্যার বলছিলেন ‘এরপর কি?’ আমি আর বলতে পারছিলাম না।” অন্য এক ক্যান্ডিডেট বলে দিলেন “এরপর হলো ফ্রি র‍্যাডিকেল সেল ইঞ্জুরি।” তিনি “ইয়েস, ইয়েস” বলে জিহব্বায় কামড় দিলেন। বললেন “আমার এবার হবে না।” অন্য এক ক্যান্ডিডেট বললেন “আপনার হবেই। আপনি গত দেড় বছর যাবত চিটাগং মেডিকেল কলেজে প্যাথলজির লেকচারার হিসাবে আছেন। আপনি অভিজ্ঞ।” দেখলাম সবাই সবাইকে চেনেন। আমি কাউকে চিনছি না। আমাকেও কেউ চিনছেন না। আমিও যে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের লেকচার তা কেউ জানেন না। এতক্ষণ যার কথা বললাম তিনিই রুহিনী দা। এই দাদা ১৯৯৯ সনে বিএসএমএমইউ-তে প্রথম এমডি কোর্স চালু হলে চাঞ্চ পেয়ে প্যাথলজিতে এমডি কোর্সে ভর্তি হন। আমি সে ১৯৯৩ সনের জুলাই সেসনেই এম ফিল চাঞ্চ পাই। ১৯৯৫ সনের জুলাই ফাইনাল পরীক্ষায় পাস করে ১৯৯৬ সনে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ফিরে আসি। ১৯৯৮ সনে সহকারী অধ্যাপক হই। আমাদের ডিপার্টমেন্টে আমার ব্যাচমেট ডাঃ এএফএম সালেহ (ইকবাল) তখন প্রভাষক ছিল। সে আমার সাথে পরামর্শ করে ১৯৯৯ সনে এমডি কোর্সে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে চাঞ্চ পেয়ে গেলো। সালেহ পিজি থেকে মাঝে মাঝে আমার সাথে দেখা করে আমাকে দোষারোপ করতো। বলত “সাদেক, দোস্ত, তুমি আমারে কি এক সমুদ্রে ফেলে দিলা, আমি এর কূলকিনারা পাচ্ছি না।” আমি সাহস দিতাম এই বলে “দেখতে দেখতে ৫ বছর শেষ হয়ে যাবে। চিন্তা করবা না।” সালেহ রুহিনী দার খুব প্রশংসা করতো। বলত “সাদেক, আমি আমার এক রিডিং পার্টনার পেয়েছি, রুহিনী দা। দাদার মতো এত ভালো মানুষ হয় না।” সালেহ ২০০৩ সনে এমডি পাস করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে আবার প্রভাষক হিসাবে ফিরে আসে। প্যাথলজি বিষয়ে প্রথম এমডি পাস করা হিসাবে সবার কাছে একটু বেশী প্রশংসা পেতে থাকে। আমি যেমন এমফিল পাস করে ময়মনসিংহ এসে ১৯৯৭ সনেই তালুকদার প্যাথলজি নামে নিজের মতো করে স্বাধীনভাবে প্রাক্টিস করতে থাকি সালেহও তেমনি নোভা প্যাথলজি নাম দিয়ে ময়মনসিংহে একটা প্যাথলজি ল্যাব দিয়ে প্র‍্যাক্টিস শুরু করে। সালেহ সারাক্ষণ রুহিনী দার প্রশংসা করতো। রুহিনী দা এমডি পাস করে চিটাগং মেডিকেল কলেজে ফিরে গিয়ে প্র‍্যাক্টিস শুরু করেন। এদিকে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে সালেহর বদলীর প্রস্তাব হয়। সালেহ এই বদলী ঠেকাতে না পেরে রুহিনী দাকেও রাজি করান দিনাজপুর নিয়ে যেতে। কর্তৃপক্ষকে রিকুয়েষ্ট করে সালেহ রুহিনীদাকে সহ একই অর্ডারে বদলীর অর্ডার করায়। অর্থাৎ দুজনই সহকারী অধ্যাপক হিসাবে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে যোগদান করেন। সালেহ প্যাথলজি বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব নেন। মাইক্রবায়োলজির পোস্ট গ্রাজুয়েট করা টিচার না থাকাতে রুহিনী দা মাইক্রোবায়োলজির প্রধানে দায়িত্ব নেন। এভাবে চলে ৩ বছর। দাদা ও সালেহ একসাথে পার্টনারশিপে নোভা প্যাথলজি নামে দিনাজপুর শহরে একটা ল্যাবরেটরি দেন। দিনাজপুরে এর আগে কেউ হিস্টোপ্যাথলজি (বায়োপসি) পরীক্ষা করতো না। এই দু’জন মিলে প্রথম দিনাজপুরে হিস্টোপ্যাথলজি পরীক্ষা শুরু করেন। দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, সৈয়দপুর অঞ্চলের সব বায়োপসি ও সাইটোপ্যাথলজি পরীক্ষা এই দু’জন বিশেজ্ঞের দ্বারা করা হতো।

২০০৭ সনের ডিসেম্বরের শেষের দিকে আমার জীবনের ছন্দপতন হলো। তত্ত্বাবধায়ক সরকার সব লণ্ডভণ্ড করে দিল। একই অর্ডারে আমাকে দিনাজপুর এবং সালেহকে ময়মনসিংহ বদলী করা হলো। আমরা যারযার কর্মস্থলে যোগদান করলাম। আমার তালুকদার প্যাথলজির রিপোর্ট করার দায়িত্ব নিলো সালেহ। আমি দিনাজপুর গিয়ে তেমন ভালো ল্যাবরেটরি পেলাম না। ততৎকালীন অধ্যক্ষের পরামর্শক্রমে আমি একটা কর্পোরেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হিস্টোপ্যাথলজি, সাইটোপ্যাথলজি ও ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি প্রাক্টিস শুরু করলাম। দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে চাকরি করতে হলো আমাকে পূর্ণ ৮ বছর। এই ৮ বছর আমার বিভাগীয় প্রধান ছিলেন সেই রুহিনী দা। যাকে নিয়ে আজ লিখবো।

দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে যোগদান করার পর ভালো ভাবে বুঝতে পারলাম কেনো সালেহ রুহিনী দার এতো প্রশংসা করতো। আসলেই প্রশংসা পাওয়ার মতো বিরাট ব্যক্তিত্ব রুহিনী দা। তিনি আমাকে সাদেক ভাই বলে ডাকতেন। আট বছর একই ডিপার্টমেন্টে কাজ করেছি। তিনি ছিলেন বিভাগের প্রধান। কিন্তু তিনি আমার সাথে বসের মতো আচরণ করেননি। শত শত গল্প করে শত শত ঘন্টা কেটেছে আমাদের। গল্প বলতে বলতে তিনি কমন একটা কথা বলতেন “হইছে কি সালেহ ভাই!” আমি ভুল শুধ্রে দিয়ে বলতাম “দাদা, আমি সালেহ না, আমি সাদেক।” সালেহ দাদার হৃদয়ে এমনভাবে গেঁথে গিয়েছিলো যে ৮ টা বছরেও দাদা আমাকে সালেহ ভাই বলেই ভুলে সম্ভোধন করে বসতেন। সালেহ আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হলেও দু’জনের সভাবে বেশ পার্থক্য আছে। কিন্তু দু’জনের মধ্যে সবচেয়ে বড় মিল হলো দু’জনেই দাদাকে খুব বেশী ভালোবাসি।

আমি একদিন দাদার অফিস-রুমে বসে কিছু কাজ করছিলাম। রুম থেকে বের হয়ে দেখি ৩ জন জুব্বা পড়া টুপি মাথায় দেয়া হুজুর দাদার রুমে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছেন। একজনের হাতে চাঁদা আদায়ের রশিদ। আমি জিজ্ঞেস করলাম

– আপনারা কিছু বলবেন?

– জি, আমরা এই স্যারের কাছে এসেছি।

– কি ব্যাপারে এসেছেন?

– আমরা একটা মাদ্রাসা ও মসজিদের সাহায্যের জন্য এসেছি।

– আসেন, আমার রুমে আসেন। পাশেই আমার রুম।

– স্যারের কাছ থেকে কিছু নিয়ে আসি। স্যার কি ব্যস্ত?

– মানে, স্যার তো মুসলিম না, পুঁজা করেন। স্যারের কাছ থেকে মসজিদের চাঁদা নিবেন?

– স্যার, হিন্দু?

– হ্যাঁ।

এরপর তারা ভালো করে দাদার নেইম প্লেটটা পড়লেন। ডাঃ রুহিনী কুমার দাস। বললেন “ও হো, ভুল হয়ে গেছে। আমরা ভাবছিলাম মোসলমান নাম “রুহানী।” আমরা সবাই মুস্কি হাসলাম। কোন কোন নামকরা ইসলামী চিন্তাবিদ ও বক্তার নামের শেষে রুহানী টাইটেল থাকে। এই হুজুররা তেমন রুহানী মানুষ ভেবে মসজিদের চাঁদার জন্য এসেছিনেন। তবে দাদার রুহুটা আসলেই রুহানী।

দাদার সাথে আমি অনেক গল্প করে কাটিয়েছি। গল্পের ছলে আমাদের উভয়ের ব্যাক্তিগত ও পারিবারিক অনেক সুখ-দুঃখের কাহিনী জানাজানি হয়ে গেছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় দাদা ক্লাস সিক্সে পড়তেন। আমি পড়তাম ক্লাস ফাইভে। দাদারা বাড়িঘর ফেলে ভারতে চলে গিয়েছিলেন। আমাদের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হয়নি। এই নয় মাস আমরা কে কি করেছি সে কথা নিয়েও আমাদের মধ্যে আলাপ হয়েছে। আমরা দুজনই ব্যবসার কাজে সেসময় হেল্প করেছি। দেশ স্বাধীন হলে দাদারা ফিরে এসে দেখেন বাড়ি ভিটা পরিস্কার। কিচ্ছু নেই তাদের। গ্রামের এক মুসলিম প্রভাবশালী ধার্মিক লোক সব নিয়ে গেছে তাদের বাড়ির। দাদাদের সাথে দেখা করে সেলোক বলে যে “তোমরা চলে যাবার পর এসব জিনিস দুর্বৃত্তরা লুট করে নিয়ে যেতো। তাই আমি তোমাদের সব কিছু নিয়ে আমার হেফাজতে রেখেছি। এখন তোমাদের জিনিসপত্র বুঝে নাও।” দাদারা সব কিছুই ফিরে পান। সেই কথা বারবার দাদা আমাকে বলতেন। মানুষ এতো ভালো হতে পারে আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। দাদা মাঝে মাঝেই লোকটার জন্য দোয়া করতেন যেনো লোকটা জান্নাতবাসী হন।

দাদার ২০০৪ সন থেকেই হার্টের রোগ ধরা পরে। হার্টের রক্তনালী চিকন হয়ে গিয়েছিল। তাই হার্টে রক্ত সরবরাহ কম হতো। তাতে বুক ব্যথা করতো। বুকে হাত দিয়ে চিন্তিত থাকতেন। অল্প হাটলেই হাফিয়ে যেতেন। আমাদের ডিপার্টমেন্ট ছিল নিচ তলায়। আমরা চারতলার ডরমিটরিতে থাকতাম। দাদা চারতলায় উঠে ক্লান্ত হয়ে পড়তেন। দাদার খুব কষ্ট হতো। এইসময় দাদার গ্রামেরই এক টাউট লোক দাদা ও দাদার ভাইয়ের নামে জমি সংক্রান্ত ব্যাপারে মামলা করে হয়রানি করেন। দাদা সারাক্ষণ মোবাইলে এনিয়ে উকিলের সাথে কথা বলেন। আমি খুব টেনশনে থাকতাম দাদাকে নিয়ে হার্ট এটাক করে বসেন কিনা। যাহোক, দাদারা সেই টাউট থেকে রেহাই পান। ২০০৯ সনে আমি, আমিনুল স্যার ও সালেহ দিল্লী-আগ্রা-জয়পুর ভ্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিলে দাদাকেও যেতে বলি। তার কষ্ট হবে বলে তিনি রাজি হলেন না। যেই সালেহ রিকুয়েষ্ট করলো অমনি রাজি হয়ে গেলেন। তবে ইন্ডিয়া টোরে দাদার কষ্ট হয়েছিলো আমরা বুঝতে পারতাম। সালেহকে দাদা এমন ভালোবাসতো যে সালেহর কথায় দাদা না করতে পারেননি।

দাদার বিয়ের আলাপও আমার কাছে করেছেন। দাদা তার বড়ভাইকে খুব মেনে চলেন। বিয়ের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বড় ভাইকেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন। দাদা চোখ বুঝে বড় ভাইয়ের কথায় বিয়েতে রাজি হয়েছেন। দাদা বৌদিকে নিয়ে খুবই সুখী জীবন যাপন করেন। দাদার দু’মেয়ে। খুবই গুণবতী হয়েছে। দুজনই ডাক্তার হয়েছে। দাদা বলেছেন “বিয়ের কথাবার্তা যখন পাকাপাকি হয়ে গেছে তখন আমার শশুর মশাই আমাকে একটু আড়ালে নিয়ে আমার হাত ধরে বললেন ‘আমার মেয়েকে তোমার কাছে সমর্পণ করলাম। তবে তোমাকে আমার একটা কথা রাখতে হবে সেটা হলো তুমি কখনো মোটর সাইকেলে উঠবে না’। ” আমাদের সময় অল্প বয়সে সাধারণত মারা যাওয়ার বেশী চাঞ্চ ছিল মোটর সাইকেল এক্সিডেন্ট। মেয়ে যেনো অল্প বয়সে বিধবা না হয় সে জন্যই হয়ত দাদার শশুর মশাই এমন ওয়াদা করিয়েছিলেন। এখন ইয়াং ডাক্তার মোটর সাইকেল এক্সিডেন্ট করে মারা যাওয়ার খবর তেমন শোনা যায়না। একটা চাঞ্চই বেশী সেটা হলো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শহীদ হয়ে যাওয়া। দাদাকে আমি কারো মোটরসাইকেলে উঠতে দেখিনি। আমাকে কেউ ওয়াদা না করালেও আমি ভয়েই মোটরসাইকেলে চড়ি না।

দাদার কাছে একদিন একটা গল্প বলেছিলাম। গল্পটা দাদার খুব ভালো লেগেছিল। গুল্পগুজবের আসর বসলে দাদা সেই গল্পটা আমাকে শুনাতে বলতেন। গল্পটা আমি শুনেছিলাম শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডাঃ এখলাছুর রহমান স্যারের কাছে। গল্পটা ছিল এমন।

পাকিস্তান আমলে এক থানার এক দারোগা ছিল। তিনি ঘুষ খেতেন। মফস্বলে গিয়ে আসামী ধরে ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দিতেন। রাতে বাসায় ফিরে ঘুষের টাকা বউয়ের হাতে দিতেন। বউ টাকা হাতে পেয়ে খুব খুশী হতেন। ট্রাংকের ভিতর টাকা সুন্দর করে গুছিয়ে রাখতেন। গহনা বানাতেন সেই টাকা দিয়ে। মাসের পহেলা বেশী টাকা দিতেন বউয়ের হাতে। বউ জিজ্ঞেস করতেন

– আইজ এতো বেশী টাকা পেয়েছেন?

– আজকের টাকা হলো বেতনের টাকা।

– অন্যদিনেরগুলা কিয়ের টাকা?

– অন্যদিনেরগুলো মফস্বলের টাকা।

বউ হিসাব করে দেখলেন যে মফস্বলের টাকা অল্প হলেও মাসের প্রতিদিন পাওয়া যায়। আর বেতনের টাকা মাসে মাত্র একদিন। তবে তুলনা করলে মফস্বলের টাকায় আয় বেশী।

একদিন খুব গরম পড়েছিল। সেদিন দারোগা চাকরি থেকে বরখাস্ত হয় ঘুষের খবর জানাজানি হয়ে। দারোগা বাসায় ফিরে খাটে বসে জামাখুলে খুব ঘামতেছিলেন। বউ বিচুন দিয়ে বাতাস করতে করতে জিজ্ঞেস করলেন

– আপনের কী অইছে? এমন করতাছেন কেন?

– আমার চাকরিটা গেছে গা।

– কোন চাকরি গেছে? বেতনেরটা, না কি মফস্বলেরটা?

– বেতনেরটা গেছে?

– যাউগ গা। মফস্বলেরটা থাকলেই অইব।

– গিন্নি, বেতনের চাকরি না থাকলে মফস্বলেরটাও থাকে না।

– এ্যা?

আমি দাদাকে বলতাম “দাদা, এখনকার দারোগারা ভালো। মফস্বলে গিয়ে ঘুষ খান না। তবে এই গল্প থেকে আমার একটা শিক্ষা আছে। ডাক্তারদের বাড়তি আয়ের জন্য ঘুষ খেতে হয় না। তারা বৈধপথেই বিকেলে প্রাক্টিস করে মোটা অংকের টাকা আয় করতে পারেন। তবে যেসব ডাক্তার ভালো পজিশনে সরকারি চাকরি করেন তাদের বৈকালিক প্রাইভেট প্রাক্টিস আয়ও ভালো। চাকরি চলে গেলে তাদের প্রাইভেট আয়ও চলে যেতে থাকে।” দাদা হে হে করে হেসে বলতেন “ডাক্তারদের প্রাইভেট প্রাক্টিস আয় হলো মফস্বলের আয়ের মতো।”

আমি দু’এক মাস পরপর ছুটি নিয়ে ঢাকায় যেতাম। পরিবার ঢাকার উত্তরায় রেখেছিলাম। রাতের বাসে ফিরে সকালে অফিস করতাম। বিকেলে প্রাইভেট প্রাক্টিস করতাম। কোন কোন দিন ঢাকা থেকে ফিরতে দেরী হলে গাইবান্ধা পর্যন্ত এসে দাদাকে ফোন দিতাম “দাদা, আমি অফিস ধরার চেষ্টা করব। গাইবান্ধা পর্যন্ত এসেছি। অফিস ধরতে না পারলে মাইন্ড কইরেন না।” দাদা হেসে বলতেন “অসুবিধা নাই। মফস্বলেরটা ধরতে পারলেই হবে।” আসলেই মফস্বলের আয় বেতনের আয়ের চেয়ে অনেকগুণ বেশী।

আমাদের সাথে ডরমিটরিতে আরেক দাদা থাকতেন মেডিসিন বিভাগের। তিনি ডাঃ তিমির বরন বসাক। রুহনী দা ও তিমির দা দুজনই আমার থেকে এমবিবিএস-এ এক বছরের সিনিয়র। তারসাথেও আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিলো। তাকে নিয়ে লেখলে সারাদিনেও পড়ে শেষ করা যাবে না। তার কথা আজ লেখব না। তিনি ছিলেন চিরকুমার। তিনি নিজ হাতে রান্না করে খেতেন। কারন, প্রায় সব মসলাতেই তার এলার্জি ছিলো। তিনি মেডিসিন বিভাগের প্রধান হয়েও নিজের কক্ষে বসতেন না। হাসতালে রাউন্ড দিয়ে ডরমিটরিতে এসে পড়তেন। একটা মাত্র সুতীর হাফ হাতা শার্ট পড়তে পারেন। কারন, অন্য কাপড়ে তার এলার্জি ছিলো। যত শীত হোক, ঐ হাফ শার্ট। তিনি একাকী থাকতে পছন্দ করতেন। আত্বীয় স্বজনের সাথেও বেশী যোগাযোগ করতে দেখিনি। এক সন্ধায় চেম্বারে তার হার্ট এটাক হলো। তাকে দ্রুত স্থানীয় একটা প্রাইভেট হার্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হলো। ওখানকার পরিচর্যা ভালো ছিলো। সাথে এটেন্ডেন্স থাকার তেমন প্রয়োজন ছিল না। তিমির দার আপনজন কেউ আসেননি। দুদিন পর তার এক বড় ভাই এলেন। তিনিও চিরকুমার। তিনিও দু’একদিন থেকে চলে গেলেন। রুহিনী দা তিমির দার কাছে ঘন ঘন যেতেন। আমি কম কম যেতাম। একদিন দেখলাম একজন ঔষধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টিটিভ ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে নিয়ে এসেছেন হাসপাতালে। ব্যাপারটা এমন- তিমির দার ব্যাংকে একাউন্ট আছে বহুদিন যাবত। তিনি বেতনের টাকা ও প্রাক্টিসের টাকা প্রায় সব ব্যাংকে জমা রাখেন। জামাকাপড় কিনতে হয় না তেমন। যা খান তার খরচও তেমন না। জমিজমাও কেনেননি। সব টাকা তার ব্যাংকে জমা। কিন্তু তিনি একাউন্ট করার পর চেক বই উঠাননি ব্যাংক থেকে। ব্যাংক থেকে একটা টাকাও উঠাননি কোনদিন। হার্টের এঞ্জিওগ্রাম করতে ঢাকায় যেতে হবে। অনেক টাকার দরকার। তাই চেকবই উঠাতে হচ্ছে। এজন্য ব্যাংক কর্মকর্তা নিজেই এসেছেন হাসপাতালে নমুনা স্বাক্ষর সংগ্রহ করতে। যাহোক, টাকা সংগ্রহ করে তিমির দা বিমানে করে ঢাকায় গেলেন। সাথে আপন লোক কেউ গেলেন না। গেলেন শুধু আনাদের রুহিনী দা। কত বড় ভালো মানুষ আমাদের রুহিনী দা। তিমির দার বিপদের সময় এটেনডেন্ট হলেন আরেক হার্টের রোগী রুহিনী দা। রুহিনী দারও এঞ্জিওগ্রাম করার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল ৮ বছর আগে। তিনি মরে যাবেন এই ভয়ে কোন দিন এঞ্জিওগ্রাম করাতে সাহস পাননি। তিনি নিয়ে গেছেন তিমির দাকে এঞ্জিওগ্রাম করাতে প্রাইভেট দামী এক হাসপাতালে। তিমির দার এঞ্জিওগ্রাম করার সময় ডাক্তারগণ হার্টের রক্তনালীতে রিং পরিয়ে দিলেন। তিমির দা সুস্থতা বোধ করলেন। এসব আমি পরে শুনেছি রুহিনী দার কাছে। আমি এগুলো জানতাম না। তিমির দার রিং পরানো দেখে রুহিনী দার সাহস বেড়ে যায়। তিনিও এঞ্জিওগ্রাম করান। কিন্তু ডাক্তার এঞ্জিওগ্রাম করে পরামর্শ দেন যে আজই অপেন হার্ট সার্জারী করে বাইপাস করে দিতে হবে হার্টের রক্তনালী। সংবাদটা রুহিনী দা আমাকে দ্রুত মোবাইলে জানান সকালে। প্রিন্সিপাল প্রফেসর হামিদুল হক খন্দকার সেদিন কলেজে আসেননি। তিনি সেদিন রংপুর বাসায় ছিলেন। আমি স্যারকে মোবাইলে জানালাম আজ রুহিনী দার ঢাকায় বাইপাস সার্জারি হবে। অবস্থা খুব খারাপ। স্যার শুধু বললেন “সেক্রেটারিকে বলে দাও মসজিদে মিলাদ দিতে।” আমি সেক্রেটারিকে বললাম প্রিন্সিপাল স্যার মসজিদে মিলাদ দিতে বলেছেন বাদ জোহর। আমি টিচারদের মধ্যে মোটামুটি রেগুলার ছিলাম মসজিদে জামাতে নামাজ পড়তে। ইমাম, মোয়াজ্জিন ও খাদেমদের সাথে সরলভাবে মিশতাম। মসজিদের মিলাদেও অংশগ্রহণ করতাম।

ছোটবেলা থেকেই আমি মিলাদে অংশগ্রহণ করতাম। ছোট বেলায় আমাদের এলাকায় বাড়ি বাড়ি মিলাদ হতো। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার আরোগ্য কামনা করে মিলাদ দেয়া হতো। কোন শুভ সংবাদ হলেও মিলাদ দেয়া হতো। নতুন ফসল ঘরে আনলেও মিলাদ দেয়া হতো। যিনি মিলাদ পড়িয়ে দিতেন তাকে বলা হতো মৌলভী। মৌলভীরা ইসলামি শিক্ষায় মোটামুটি শিক্ষিত ছিলেন। তারা মিলাদের সময় হালকা বয়ান করতেন। রাসুল মুহম্মদ (সঃ) এর জন্ম বৃত্তান্ত বলতেন, কোর আন থেকে কিছু আয়াত তেলাওয়াত করতেন এবং উর্দু, ফার্সি ও বাংলায় কবিতাকারে ছন্দ মিলিয়ে সুর করে মহানবী (সঃ) এর গুণ গান করতেন। যেমন,

বালাগাল উলামে কামালি হী

কাসাফাত দোজা বি জামালি হী।

হাসুনাত জামিও খিসালি হী

সাল্লু আলাইহি ওয়ালি হী।।

ইয়া নাবী সালামু আলাইকা

ইয়া রাসুল সালামু আলাইকা।

ইয়া হাবিব সালামু আলাইকা

সালামু তুল্লাহ আলাইকা।।

নবী না হয়ে দুনিয়ায়

না হয়ে ফেরেস্তা খোদার।

হয়েছি উম্মত তোমার

তার তরে শোকর হাজার বার।।

এমন অনেক সিল্কি গাইতেন মৌলভীরা। মিলাদের পর সবাইর মাঝে খাজা, বাতাসা ও কদমা বিলি করা হতো। এগুলোর লোভে সব পোলাপান মিলাদের অংশ গ্রহণ করত। অল্প শিক্ষিত মিলাদ পড়ানে ওয়ালাকে মুন্সী বলা হতো। মৌলভী ও মুন্সীদের ভালো অংকের টাকা দেয়া হতো হাদিয়াসরূপ। একবার আমজানি বুবুদের বাড়ি গিয়ে পাশের বাড়িতে মিলাদে গিয়েছিলাম। একজন মুন্সী মিলাদ পড়াচ্ছিলেন। অনেক পোলাপান হয়েছিল সেই মিলাদে। মুন্সী সুর করে করে মিলাদের বাক্য বলছিলেন। পোলাপানের গ্যাঞ্জামে মিলাদ ভালো শুনা যাচ্ছিল না। মুন্সী মিলাদের সুরে সুরে গেয়ে গেলেন

“পোলাপান গোলমাল করিস না,

নইলে কইল খাজা পাবি না।”

আমরাও সুরে সুরে বললাম

“পোলাপান গোলমাল করিস না,

নইলে কইল খাজা পাবি না।”

শুনে পোলাপানের দল খিলখিল করে হেসে দিলো।

যাহোক, সেই মিলাদ নিয়ে এখন ইসলামি স্কলারদের মধ্যে দ্বিমত আছে। কেউ কেউ এটাকে বিদআত বলছেন। তাই, অনেকেই মিলাদ বর্জন করছেন। প্রিন্সিপাল স্যারের কথামতো আমি কলেজের সেক্রেটারিকে মিলাদের ব্যবস্থা করতে বললাম। মিলাদ উপলক্ষে মসজিদে জিলাপি ও আনুসংগিক তোবারক আনা হলো সরকারি ধর্মীয় ফান্ড থেকে। তোবারক দেখে সেদিন পোলাপান মুসুল্লির সংখ্যা একটু বেশীই হলো। ইমাম সাবের পাশেই আমি বসেছিলাম মিলাদে। ইমাম সাবও মিলাদের পক্ষের লোক না। তিনি সরকারি ইমাম। তাই সরকারি অর্ডার তার পালন করতে হতো। তাই তিনি কবিতাগুলো বাদ দিয়ে কিছু কোরআন তেলাওয়াত করলেন, কিছু দরুদপাঠ করলেন। আমার কানের কাছে মুখ এনে জিজ্ঞেস করলেন “স্যার, কি উপলক্ষে মিলাদ?” আমি বললাম “ডাঃ রুহিনী কুমার দাস স্যার খুব অসুস্থ। তার হার্টের ওপেন সার্জারী হচ্ছে আজ। তারজন্য দোয়া করা।” ইমাম সাব চমকে গেলেন কুমার দাস শুনে। তারপর সাভাবিক হয়ে মোনাজাত ধরলেন। মোনাজাতে এক পর্যায়ে বললেন “ইয়া আল্লাহ আমাদের ডাঃ রুহিনী কুমার দাস স্যারের প্রতি তুমি রহম করো। তাকে তুমি আরোগ্য দান করো।” সবাই বললেন “আমিন, আমিন, আল্লাহ হুম্মা আমিন।” সবাই তোবারক খেয়ে ফিরে গেলো।

যাহোক, রুহিনী দার সেদিন হার্টের অপারেশন হলো। আল্লাহ রুহিনী দাকে সুস্থ করে দিনাজপুর আনলেন। দাদাকে আমি অনেকদিন কাজ করতে দেইনি। আমিই ডিপার্টমেন্টের কাজকর্ম চালিয়ে নিয়েছি। অপারেশনের সময় তিনি অজ্ঞান ছিলেন। জ্ঞান ফেরার পর তার যে তীব্র যন্ত্রণা হতো তার তিনি বিভতস ভাবে বর্ণনা করতেন। বাম বুকে হাত দিয়ে চোখ বড় বড় করে বলতেন “সালেহ ভাই, কি যে কষ্ট হয়েছে আমার! অসয্য কষ্ট!” আমি বলতাম “দাদা, আমি সালেহ না, আমি সাদেক।” আমি ২০১৫ সনের শেষ পর্যন্ত দিনাজপুর ছিলাম। দাদার অপারেশন হয়েছে ২০১২ সনে। এই ৪ বছরই দাদাকে দেখতাম বাম বুকে হাতে দিয়ে থাকতে। মাঝে মাঝে আমি হাত নামিয়ে দিতাম। বুকে হাত দিয়ে থাকা দাদার অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল।

আমার বড় মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান হয় ২০১২ সনে ঢাকায়। দাদার কষ্ট হওয়া সত্বেও সেই অনুষ্ঠানে দাদা উপস্থিত হয়েছিলেন। দাদা আমাকে না ছাড়তে চাইলেও আমি যে ৮ বছর ধরে দিনাজপুর কষ্ট করে থাকছি এটা দাদা অনুভব করতেন। তাই তিনিও চাইতেন যেনো আমি ময়মনসিংহে ফিরে আসতে পারি। আল্লাহর রহমতে কিংবদন্তি শিক্ষক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মনছুর খলিল স্যার আমাকে বদলি করে কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসেন ২০১৫ সনের শেষে। অর্ডার নিয়ে দিনাজপুর গিয়ে দেখি দাদা আমার জন্য সুন্দর একটা নেইম প্লেট বানিয়েছেন। লাগানোর অপেক্ষায় আছেন। আমার বদলীর অর্ডার শুনে তিনি বিমর্ষ হয়ে বললেন “আমি আপনার জন্য সুন্দর একটা নেইম প্লেট বানালাম, আপনি চলে গেলেন! ভগবান আপনার মঙ্গল করুন।” তিনি নেইম প্লেটটা প্যাকেট করে আমাকে দিয়ে দিলেন। সেইটা কিছুটা মোডিফাই করে আমি এখন ব্যবহার করছি। দাদার স্মৃতি ফেলে দেইনি। দাদা ডিপার্টমেন্ট ও ডর্মেটরির পক্ষ থেকে আমাকে গর্জিয়াস ভাবে বিদায় সংবর্ধনা দেন। উপহার দেন অনেক কিছু। আমি তার দেয়া উপহার সামগ্রী গর্ব ও মহব্বতের সাথে ব্যবহার করি।

২০১৯ সনের নভেম্বরে প্রফেসর ডাঃ সালেহ জামালপুর শেখ হাছিনা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল হয়ে চলে যাওয়ায় ময়মনসিংহের প্যাথলজি বিভাগের প্রধানের পোস্টে আমার ফিরে আসার সুযোগ হয়। আমি জানতাম এই সংবাদে রুহিনী দাই বেশী খুশী হবেন। তাই আমি প্রথমেই রুহিনী দাকে জানাই। দাদা খুব খুশী হন। আমি এই বিভাগে ২০০২ সনেও কয়েকমাস ১৬ তম বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে ছিলাম। চাকরির শেষ জীবনে এসে আবার ২৫ তম বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পেয়ে খুব ভালো কাটলো ২০২০ সনের এপ্রিলের ১৩ তারিখ পর্যন্ত আমার সরকারি চাকুরির শেষ সময়কাল। আমি বিদায় নিলাম সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে। দাদা দিনাজপুর থেকে অধ্যাপক হিসাবে অবসর নিয়ে এখন কুমিল্লায় এক বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আছেন। প্রায়ই আমাদের মধ্যে কথা হয় মোবাইলে।

১৬/৬/২০২০ খ্রি.

ময়মনসিংহ